Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ফল আর্মিওয়ার্ম পোকা দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি

প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম১ প্রফেসর ড. মো. ফারুক হাসান২ কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম৩

বিশ্বব্যাপী ভুট্টার একটি মারাত্মক ক্ষতিকর ও বিধ্বংসী পোকা হলো ফল আর্মিওয়ার্ম বা সাধারণ কাটুই পোকা যার বৈজ্ঞানিক নাম ঝঢ়ড়ফরঢ়ঃবৎধ ভৎঁমরঢ়বৎফধ। অত্যন্ত ক্ষতিকর, বিকল্প পোষকের উপস্থিতি এবং সেই সাথে দমন ব্যবস্থাপনা কঠিন হলেই কেবল একটি পোকা মারাত্মক ক্ষতিকর বা মুখ্য ক্ষতিকর পোকা হয়ে উঠে। এ তিন বৈশিষ্ট্যের প্রতিটিই রয়েছে এ পোকার মধ্যে। এটি মূলত আমেরিকা মহাদেশের পোকা হলেও ২০১৬ সালে আফ্রিকা এবং ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিশেষত ভারত, শ্রীলঙ্কায় এ পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। উদ্বেগের বিষয় হলো ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে স্থাপনকৃত ফেরোমোন ফাঁদে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহে এ পোকার উপস্থিতি দেখা যায়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে ভুট্টা উৎপাদনকারী প্রায় সব জেলাতেই এ পোকার উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে।
পোকা চেনার উপায়
এ পোকার বাচ্চা বা কীড়ার দেহের উপরিভাগে দুইপাশে লম্বালম্বিভাবে গাঢ় রঙের দাগ রয়েছে। দেহের তলপেটের ৮ম অংশের উপরিভাগে ৪টি স্পষ্ট কালো দাগ আছে। মাথায় উল্টা ণ অক্ষরের মধ্যে জালের মতো দাগ রয়েছে।
ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণের মাত্রা, জীবনকাল ও ক্ষতির লক্ষণ  
এ পোকা ভুট্টা, সরগম, বাদাম, তামাক, বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজিসহ প্রায় ৮০ প্রকারের ফসলে আক্রমণ করে থাকে। তবে ভুট্টায় আক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। পোকাটি বাচ্চা বা কীড়া অবস্থায় গাছের পাতা ও ফল খেয়ে থাকে। কীড়ার প্রাথমিক অবস্থায় খাদ্য চাহিদা কম থাকে, তবে কীড়া বড় হতে থাকলে বিশেষ করে শেষের দিকে চাহিদা প্রায় ৫০ গুণ বৃদ্ধি পায়। সে কারণে শেষ ধাপসমূহে (৪-৬ ধাপ) অর্থাৎ কীড়া পূর্ণাঙ্গ বা বড় আকারের হলে রাক্ষুসে হয়ে উঠে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এমনকি এক রাতের মধ্যে সমস্ত ফসল নষ্ট করে দিতে পারে।
এ পোকার জীবনকাল ডিম-কীড়া-পুত্তলি-পূর্ণাঙ্গ পোকা এ চার ধাপে সম্পন্ন হয়। গ্রীষ্মকালে পোকাটি ৩০-৩৫ দিনে এবং শীতকালে ৭০-৭৫ দিনে    জীবনকাল সম্পন্ন করে। স্ত্রী পোকা গাছের গোড়ার দিকের কাÐের সাথে পাতার সংযোগস্থলের নিচের দিকে ১০০-২০০টি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বেড় হওয়া বাচ্চাগুলো পাতা খেতে শুরু করে এবং পাতায় ছোট ছোট সারি ছিদ্র (জড়ি ড়ভ যড়ষবং ষরশব ংুসঢ়ঃড়স) তৈরি করে। কচি গাছের পাতার কানের মতো মোড়ানো অংশ এবং বড় গাছের ভুট্টার মোচার চারপাশে মোড়ানো পাতা খেতে পছন্দ করে। ভুট্টার মোচার চারপাশের পাতা খাওয়ার পর এরা মোচার ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং মোচায় তৈরি হওয়া নরম দানাগুলো খেতে থাকে। এর মধ্যে ফল আর্মিওয়ার্মের কীড়াগুলো পরিণত ও বড় হয়ে পাতা খেয়ে ঝাঝরা করে ফেলে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে ভুট্টা গাছের মাথার দিকে পৌঁছায়। কচি গাছ হলে বৃদ্ধি বন্ধ হয় এবং নতুন কোনো পাতা গজায় না। মোটামুটি ১৪ দিন পর পূর্ণাঙ্গ কীড়া পিউপা বা পুত্তলি দশায় পৌঁছার জন্য মাটিতে পড়ে। এ সময় এরা ১-৩ ইঞ্চি গভীরে অবস্থান করে। মাটি খুব বেশি শক্ত হলে ঝরে পড়া পাতা দিয়ে নিজেদের ঢেকে রাখে। এর প্রায় ৮-৯ দিন পর পূর্ণাঙ্গ মথ মাটি থেকে বের হয়ে আসে এবং পুনরায় জীবনচক্রটি শুরু করে। উষ্ণ, আর্দ্র    আবহাওয়ায় একটি ভুট্টা ফসল মৌসুমে পোকাটি ৪-৫টি জীবনচক্র সম্পন্ন করতে পারে। এ জন্য খুব অল্প সময়ে এটি বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে।
পোকা বিস্তারের মাধ্যম
পোকাটি পৃথিবীব্যাপী সংগনিরোধ বালাই হিসেবে পরিচিত। ডিম, কীড়া, পুত্তলি অবস্থায় বিভিন্ন উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত উপাদান যেমন- চারা, কলম, কন্দ, চারা সংলগ্ন মাটি ইত্যাদির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। পূর্ণাঙ্গ পোকা অনেক দূর পর্যন্ত উড়তে পারে। এমনকি ঝড়ো বাতাসের সাথে কয়েক শত কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে।
দমন ব্যবস্থাপনা
যেহেতু পোকাটি ইতোমধ্যে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশে ভুট্টা আবাদকৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে ব্যাপক ফসলহানির সম্ভাবনা রয়েছে। পোকাটি যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় পোকাটির অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে। চারা গজানোর পর থেকে মোচা আসা পর্যন্ত নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে মোচায় আক্রমণ হলে এ পোকা দমন করা প্রায় অসম্ভব এবং ফলন শূন্যের কোঠায় চলে আসতে পারে। পোকার উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য ফসল লাগানোর সাথে সাথে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। এজন্য ভুট্টা ও অন্যান্য পোষক ফসলের জন্য বিঘা প্রতি অর্থাৎ ৩৩ শতকে ৫ থেকে ৬ টি ফাঁদ পাততে হবে এবং সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে পোকার উপস্থিতি। পোকাটি রাতের বেলা আক্রমণ করে থাকে, দিনের বেলা লুকিয়ে থাকে। তাই ভুট্টা গাছে সরাসরি খাওয়ার লক্ষণ বা এদের মল দেখেও আক্রান্ত গাছ শনাক্ত করা যায়। পূর্ণাঙ্গ পোকা, পোকার কীড়া কিংবা ক্ষতির লক্ষণ চেনার জন্য প্রয়োজনে আপনার বøকের  উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাহায্য নিতে পারেন।
ক্ষতিকর-রাক্ষুসে এ পোকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমত ভুট্টা লাগানোর সময় কোরাজেন (১ মিলি/কেজি বীজ) জাতীয়    কীটনাশক দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। গাছের দুই-তিন পাতা অবস্থা হতেই আক্রান্ত গাছ হতে ডিম বা সদ্য ফোটা দলাবদ্ধ কীড়া সংগ্রহ করে পিষে মেরে ফেলতে হবে অথবা এক ফুট গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এছাড়া হাত বাছাই (ঐধহফ ঢ়রপশরহম) ভুট্টার মোচা আসা পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। আক্রান্ত গাছ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় (৯০-১০০ ফুট এলাকা জুড়ে) অতিদ্রæত জৈব বালাইনাশক স্পোডোপটেরা নিউক্লিয়ার পলিহাইড্রোসিস ভাইরাস (এসএনপিভি) এক লিটার পানিতে ০.২ গ্রাম হারে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছ ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। এভাবে ৭ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার জৈব বালাইনাশক এসএনপিভি স্প্রে করতে হবে। সম্ভব হলে  উপকারী পোকা ব্রাকন হেবিটর (ইৎধপড়হ যবনবঃড়ৎ) আক্রান্ত এলাকায় ছেড়ে দিতে হবে। এরা ফল আর্মিওয়ার্মের কীড়ার গায়ে ডিম পাড়ে। ফলে ঐ কীড়াগুলো ভুট্টার ক্ষতি করতে পারে না। যদিও এ পোকা দমনে রাসায়নিক কীটনাশক তেমন কার্যকর নয়, তবে একান্ত প্রয়োজনে প্রোক্লেইম (১ গ্রাম/লি.) বা স্পিনোসেড ট্রেসার (০.৪ মিলি/লি.) বা ভিরতাকো (০.৬ গ্রাম/লি.) বা নাইট্রো (১মিলি/লি.) জাতীয় কীটনাশক আক্রান্ত জমি ও পাশ্ববর্তী এলাকায় পড়ন্ত বিকেলে ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কারণ বিক্ষিপ্ত ভাবে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের ফলে আর্থিক ক্ষতি, পরিবেশের ক্ষতি এমনকি কীটনাশকের প্রতি পোকার প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হতে পারে। আক্রান্ত ফসলে সেচ দেয়ার সময় যতটুক সম্ভব ঢালাও বা প্লাবন সেচ দিতে হবে।
পরবর্তী ফসলে ভুট্টা বা অন্যান্য পোষক ফসল চাষ না করে ধান চাষ করলে এ পোকার আক্রমণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আফ্রিকাতে স্থানীয় প্রযুক্তি হিসেবে আক্রান্ত ভুট্টা গাছের গোড়ার মাটি বা ছাই ও মরিচ বাটা বা গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে কাদা বানিয়ে বদনা বা মগ দিয়ে খোলে বা পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ৩-৪ দিনের মধ্যেই কীড়াগুলো মারা যায়। তবে এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। য়

১ভাইস-চ্যান্সেলর ও পরিচালক, কৃষক সেবা কেন্দ্র, হাজী মোহামম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি), দিনাজপুর, ২চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, হাবিপ্রবি, দিনাজপুর, ৩পিএইচডি ফেলো (এনএটিপি), কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, হাবিপ্রবি, দিনাজপুর। মোবাইল : ০১৭১৯৫৪৭১৭৯, ই-মেইল:ayemdae@yahoo.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon